পর্ণা চ্যাটার্জী, কলকাতাঃ গুরু পূর্ণিমা হিন্দু সনাতন ধর্মের একটি বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ দিন। হিন্দু ধর্মের পাশাপাশি জৈন এবং বৌদ্ধ ধর্মেও গুরু পূর্ণিমা পালন করা হয়। বাংলা ক্যালেন্ডার অনুযায়ী আষাঢ় মাসের পূর্ণিমা তিথিতে গুরু পূর্ণিমা পালিত হয়। নাম শুনেই বোঝা যাচ্ছে এই দিনটি গুরুকে উৎসর্গ করা হয়। শুধুমাত্র ধর্ম গুরুই নয় তার পাশাপাশি শিক্ষাগুরুকেও বন্দনা করা হয় এই দিনে। অজ্ঞতার অন্ধকার কাটিয়ে জ্ঞানের আলোতে নিয়ে এসেছেন যারা তারা পূজনীয় তো বটেই।
গুরু পূর্ণিমা ব্যাস পূর্ণিমা নামেও পরিচিত। পৌরাণিক ঋষি ব্যাসদেবের জন্মতিথি এই গুরু পূর্ণিমা। এই তিথিতেই পরাশর ঋষি এবং শবর কন্যা সত্যবতীর ঘরে জন্ম নেয় ঋষি বেদব্যাস। ভগবান বিষ্ণুর অবতার ব্যাসদেবকেও পুজো করা হয় এই দিনে। সনাতন ধর্ম গ্রন্থ বেদকে চারটি ভাগে ভাগ করেন এই ব্যাসদেব। আর মহাভারত রচনার কথাতো সবাই জানে। আজকের দিনে ব্যাসদেবকেও পুজো করা হয়। মানুষের বিশ্বাস আজকে ব্যাসদেবকে পুজো করলে ব্যাসদেব এবং ভগবান বিষ্ণুর আশীর্বাদ পাওয়া যায়।
এর পাশাপাশি গুরু গ্রহ বৃহস্পতির পুজোও করা হয় গুরু পূর্ণিমাতে। সনাতন ধর্মের বিশ্বাসানুযায়ী জ্ঞান ও প্রজ্ঞার প্রতীক বৃহস্পতি গ্রহ। জ্ঞান ও উন্নত চিন্তাশক্তি অর্জনের জন্য বৃহস্পতি গ্রহকে পুজো করা হয় আজকের দিনেই। এছাড়াও বুদ্ধ ধর্ম মতানুজায়ী গুরু পূর্ণিমার দিনেই গৌতম বুদ্ধ সারনাথে প্রথম ধর্মোপদেশ দিয়েছিলেন। বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের কাছেও এই দিনটির গুরুত্ব বিশেষ।
গুরু কথার অর্থ শিক্ষক, পথপ্রদর্শক। সেক্ষেত্রে বাবা মা ই জীবনের প্রথম গুরু। তারপর স্কুল কলেজ জীবনের শিক্ষক শিক্ষিকারা তারপর পরবর্তী জীবনে বস বা টিম লিডার প্রত্যেকজন গুরুই আমাদের জীবনের সমান গুরুত্বপূর্ণ। সেই সব মানুষগুলো কে বাদ দিলে কোনও মানুষ আজকে যা সেটা হতে পারত না। তাই সেই সমস্ত গুরুদের পথপ্রদর্শকদের গুরু পূর্ণিমার অনেক শ্রদ্ধা এবং প্রণাম।