পর্ণা চ্যাটার্জী, কলকাতাঃ পৃথিবীর আদি থেকে যখন মানুষ স্টাইল শিখেছে তখন থেকেই দাড়ি হয়ে উঠেছে ছেলেদের স্টাইলের চিহ্নস্বরূপ। বর্তমানে প্রায় সব ছেলের মুখই দাড়িতে ঢাকা। কারও ট্রিম করে মাপা দাড়ি, তো কারও আবার অগোছালো দাড়ি, আবার কারোর কায়দা করা ফ্রেঞ্চ কাট। আজকের দিনে দাড়ি স্টাইল স্টেটমেন্ট হলেও একটা সময় কিন্তু দাড়িকে বীরত্বের প্রতীক হিসেবে মনে করা হত। যত বড় এবং যত পরিপাটি দাড়ি হবে তত বেশি বীর বলে গণ্য হত তারা। কিন্তু এই দাড়িই যদি কারোর মৃত্যুর কারণ হয়ে দাঁড়ায় তখন?
এমনই এক আশ্চর্য দুর্ঘটনা ঘটেছিল আজ থেকে প্রায় কয়েকশো বছর আগে অস্ট্রিয়ায়। ষোড়শ শতকের মাঝামাঝি সময়ে অস্ট্রিয়ার ব্রাউনাউ শহরের মেয়র ছিলেন হান্স স্টেইনিঞ্জার। মেয়র ছাড়াও তিনি বিখ্যাত ছিলেন তার দাড়ির জন্য। দাড়ির রেকর্ড ছিল তার। তার দাড়ির উচ্চতা ছিল ১.৭২ মিটার অর্থাৎ প্রায় সাড়ে পাঁচ ফুট। এই দাড়ি কাঁধে নিয়ে ঘুরে বেরতেন তিনি। কিন্তু এক দুর্ঘটনায় পড়ে তার সাধের দাড়িই হয়ে ওঠে তার মৃত্যুর কারণ।
১৫৬৭ সালে ব্রাউনাউ শহরে এক ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড ঘটে, যার ফলে প্রায় অনেকটা অংশই ক্ষতিগ্রস্ত হয়। হান্স স্টেইনিঞ্জার তখন ছিলেন তার অফিসে। অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা শুনে সকলেই ছোটাছুটি শুরু করেন হান্স সাহেবও তার বিকল্প ছিল না। তাড়াহুড়ো করে সিঁড়ি দিয়ে নামতে গিয়ে দাড়ি পায়ের তলায় চলে আসে তাতেই পা পিছলে যায় তার। পাথরের মেঝে হওয়ার দরুন পড়ে গিয়ে মাথায় ছোট পান তিনি। এবং কয়েক মিনিটের মধ্যেই মৃত্যু হয় তার। যথাযথ নিয়ম মেনেই তাকে সমাধিস্থ করা হয়, যদিও সমাধির পূর্বে তার সাধের দাড়ি কেটে নেওয়া হয়। আজ এত বছর পরেও ব্রাউনাউ মিউজিয়ামে সংরক্ষন করে রাখা আছে সেই দাড়ি।