পর্ণা চ্যাটার্জী, কলকাতাঃ চিকিৎসার জন্য দক্ষিণ ভারতে যাওয়া বাঙালিদের কাছে নতুন নয়। উচ্চমানের চিকিৎসা এবং কম খরচ এই দুই সুবিধার কথা মাথায় রেখেই চিকিৎসার কারনে দক্ষিণ ভারতে যায় সবাই। তেমনই দক্ষিণ ভারতের এক অতি প্রসিদ্ধ সুপার ফ্যাসিলিটি হসপিটাল ‘সাই বাবা সুপার ফ্যাসিলিটি হসপিটাল’। ২০০১ সালের ১৯ শে এই হসপিটাল প্রতিষ্ঠা হয়। তারপর থেকেই এই দীর্ঘ ২২ বছর ধরে মানুষের সেবা করে চলেছে এই হসপিটাল। এখানে পুর চিকিৎসা করা হয় বিনামূল্যে। চিকিৎসার জন্য কোন খরচ করতে হয় না মানুষকে। এমনকি এই হসপিটালে কোন ক্যাশ কাউন্টারও দেখতে পাওয়া যায় না। যা ভারতবর্ষের অন্য কোন হসপিটালে দেখা যায় না।
• এই হসপিটাল সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিই।
এই হসপিটালে চিকিৎসা হয় সম্পূর্ণ বিনামূল্যে।
জাতি ধর্ম নির্বিশেষে সকল মানুষ এখানে সমান সুবিধা পায়। কোন রকম রিজার্ভেশনের ব্যাপার নেই এখানে।
আগে আসলে আগে চিকিৎসা এই পদ্ধতি মেনেই এখানে কাজ হয়। কোন রকম ভিতরে কাউকে দিয়ে কাজ করানো যায় না। এখানে কাউকে কোন রকম টিপস দিতে হয় না।
এমনকি ইমেলের মাধ্যমে কোন রিপোর্ট পাঠালেও তা গ্রহণযোগ্য হয়। তার ভিত্তিতে কাজ হয়।
• কি ভাবে পৌছবেন এই হসপিটালে?
হসপিটালটি ব্যাঙ্গালুরুতে। ব্যাঙ্গালুরু বিমানবন্দর থেকে ১০ কিমি দূরে অবস্থিত। এছাড়া যদি আপনি ট্রেন বা বাসে আসেন তাহলে স্টেশন থেকে দূরত্ব ২৪ কিমি। বিমান বন্দর থেকে বা স্টেশন থেকে আপনারা হসপিটালে আসার সোজা বাস পেয়ে যাবেন। সারাদিনে অনেকগুলি বাস আসে এই রাস্তায়।
• কি ভাবে চিকিৎসা করাবেন?
এখানে রোজ সকাল থেকে ডাক্তার বসেন। ৬ টা থেকে ৮ টার মধ্যে লাইন দিতে হবে এবং ডাক্তার দেখানোর জন্য টিকিট কাটতে হবে। এরপর আউটডোরে ডাক্তার দেখে সিদ্ধান্ত নেবেন যে ভর্তি নেওয়ার দরকার আছে কিনা। এখানে সব ধরনের পরীক্ষা বিনামূল্যেই হয়। পরীক্ষার রিপোর্ট দেখেও ডাক্তার সিদ্ধান্ত নেন কি করবেন না করবেন।
• কোথায় থাকবেন?
দক্ষিণ ভারতে চিকিৎসা করতে যাওয়ার ক্ষেত্রে সব থেকে চিন্তা থাকে থাকা খাওয়া নিয়ে। চিকিৎসায় খরচ না হলেও থাকা খাওয়া বাবদ বিস্তর খরচ হয়। কিন্তু এখানে সেই সমস্যা নেই। ভারতের একমাত্র এই হসপিটালে বিনামূল্যে থাকার ব্যবস্থা আছে। হসপিটালের বাইরে থাকার সুন্দর ব্যবস্থা করা আছে। এছাড়া কেউ চাইলে হোটেলেও থাকতে পারেন। সেখানেও খরচ অতি সামান্য দিনপ্রতি ২০০ টাকা মাত্র। সেখানে নিজেরা রান্না করে খেতে পারবেন।
• কি খাবেন?
থাকার পরই এবার আসে খাওয়ার প্রশ্ন। আপনি হোটেলে থাকলে নিজে রান্না করে খেতে পারবেন। এছাড়া হসপিটালে রয়েছে নিজস্ব ক্যান্টিন। যেখানে সবাই খাওয়া দাওয়া করতে পারে। খাবার খরচ ২০-২৫ টাকা মত রোজ। ২০-২৫ টাকায় পেট ভরে খাবার পেলে আর কি চাই?
ভারতবর্ষের একমাত্র এই হসপিটাল সবথেকে কম খরচে সুচিকিৎসা প্রদান করে আসছে এত বছর ধরে। প্রতিদিন দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে লক্ষ লক্ষ মানুষ চিকিৎসার জন্য এখানে আসছেন। তবে কখন এবং কবে কি ডাক্তার বসে তা জেনে আসলে সকলেরই সুবিধা। আপনি যদি সবটাই আগে থেকে জেনে যান তাহলে কোনরকম বিপদ বা খারাপ মানুষের হাতে পড়তে হবে না আপনাদেরকে।