মঙ্গলবার গণেশ পুজো। পুরান অনুযায়ী, হিন্দু ধর্মের সব পুজোর আগে গণেশ পূজো করতে হয়। গনেশের আরাধনার পরই শুরু করা যায় অন্যান্য দেবদেবীর আচার। শুধু তাই নয়, গৃহ প্রবেশ বা যে কোনো শুভ কাজের আগে বাপ্পাকে স্মরণ করা হয় সবার আগে। দীর্ঘদিন ধরেই চলে আসছে এই রীতি।
কিন্তু সবার আগে কেন পূজিত হন গণেশ। পুরান অনুযায়ী এর নেপথ্যে রয়েছে দুটি কাহিনী। মা পার্বতী একদিন চন্দন দিয়ে একটি পুতুল তৈরি করেন। সেই পুতুলের মধ্যে নিজের সন্তান রূপে প্রাণ সঞ্চার করেন তিনি। সদ্য প্রাণ পাওয়া সেই পুত্রকে রেখে এরপর স্নান ঘরে যান দেবী পার্বতী। ছেলেকে নির্দেশ দেন, কেউ যেন না ঢোকে তার ঘরে। সেই অনুযায়ী,বন্ধ ঘরের সামনে পাহারায় বসেন গনেশ।
এরপর ঘরে ঢুকতে আসেন খোদ মহাদেব। গণেশ বাধা দিলে ক্ষুব্ধ হন তার পিতা। রেগে গিয়ে গণেশকে আক্রমণ করেন মহাদেব। ধর থেকে মাথা আলাদা করে দেন ছেলের। স্নান সেরে গনেশকে সেই অবস্থায় দেখে কান্নায় ভেঙে পড়েন মা পার্বতী। মা পার্বতীর কান্না থামাতে, মহাদেব হস্তিশাবকের মাথা কেটে নিয়ে আসেন। সদ্য প্রাণ পাওয়া ছেলের মাথায় বসিয়ে দেন হস্তিশাবকের গর্দান। গণেশকে আশীর্বাদ করেন সব দেবতার আগে পূজিত হবেন তিনি। তাই আজও যেকোনো দেবদেবীর পূজা শুরুর আগে গণেশের আরাধনা করা হয়।
দ্বিতীয় কাহিনীটি হল, গণেশ এবং তার ছোট ভাই কার্তিকের মধ্যে একবার ত্রিভুবন পরিক্রমার প্রতিযোগিতা হয়েছিল। দুজনকে বলা হয়েছিল যে ত্রিভুবন পরিক্রমা করে আগে ফিরে আসবে তাকে পুরস্কার হিসেবে অমরত্ব এবং জ্ঞান ভান্ডার দেওয়া হবে। কার্তিক ঠাকুর তখন নিজের বাহন ময়ূরে চড়ে ত্রিভুবন পরিক্রমায় পাড়ি দেন।
চতুর গণেশ কিন্তু তা করেননি। শিশু তার বাবা-মাকেই প্রদক্ষিণ করে। কারণ জিজ্ঞাসা করলে গণেশের উত্তর, তার বাবা-মাই অর্থাৎ শিব পার্বতী তার কাছে ত্রিভুবন। খুশি হয়ে মহাদেব এবং পার্বতী তাকে অমরত্ব ও জ্ঞান ভান্ডার দান করেন। এই কারণেই যে কোন দেবদেবীর পূজোর আগে মর্তে গণেশের আরাধনা করা হয়।