Home » Kolkata: খোদ কলকাতায় বাঘের দৌরাত্ম্য, শহরে বাঘ পরা নিয়ে হত তোলপাড় খবরের কাগজে

Kolkata: খোদ কলকাতায় বাঘের দৌরাত্ম্য, শহরে বাঘ পরা নিয়ে হত তোলপাড় খবরের কাগজে

মহানগরীর ইতিহাস পুরনো নয়। মাত্র ৩৩০ বছর আগে ১৬৯০ সালে বেহালার সাবর্ণ চৌধুরীদের কাছ থেকে তিনটি গ্রাম কিনেছিলেন ব্রিটিশ ইষ্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির আমলা জব চার্নক। সুতানটি, কলকাতা এবং গোবিন্দপুর। এই তিনটি গ্রাম নিয়েই কলকাতা নগরীর পত্তন হল। মহানগরী উত্থানের ষোলো বছর পর, অর্থাৎ ১৭০৬ সালের কোম্পানি জরিপ অনুযায়ী সুতানটি গ্রামের ৮০ শতাংশ জঙ্গল, আর গোবিন্দপুরের ৯৫ শতাংশই গভীর জঙ্গলে ঢাকা। আর সেই জঙ্গলে বাঘ থাকবে না, তাই কি হয়?

কলকাতার জঙ্গলে বাঘ দেখেছেন, ১৮২৫ সালেও এমন মানুষের বাস ছিল। ‘সমাচার দর্পণ’ পত্রিকায় লেখা অনুযায়ী, “অল্পকালেতে যে কোন নগর এমত বর্ধিষ্ণু হইয়াছে ইহা আমরা প্রায় শুনি নাই। চিতপুরের যে ব্যাঘ্র-ভীতি তাহা অদ্যাপি লোকেরা কহে এবং যাহারা চৌরঙ্গীর বন দর্শন করিয়াছে এমত লোকও অদ্যাপি আছে।” তবে ‘সমাচার দর্পণ’ যাঁদের কথা উল্লেখ করেছেন তাঁরা চৌরঙ্গীর জঙ্গল দেখেছেন বা বাঘের কথা শুনেছেন। নিজের চোখে বাঘ তাঁরা কেউই দেখেনি। তবে লোকালয়ে জলজ্যান্ত বাঘ ঢুকে পড়ার কথাও আছে ‘সমাচার দর্পণ’এ।

সমাচারের অন্য এক প্রতিবেদনে সুন্দরবনের জঙ্গল থেকে বাঘ এসে পড়েছে। “ঐ বাঘ সুন্দরবন ছাড়িয়া শুড়িটোলা ও বাগমারি ও বেলগাছি এই তিন গ্রাম বেড়িয়া গৌরীপুর গ্রামে একজন স্ত্রীলোককে ধরিয়া খাইলো।” অতঃপর সেই বাঘ “একজন দুঃখী লোকের ঘরে প্রবেশ করিল।” সেই ব্যক্তি বাঘকে ঘরের মধ্যে বন্দি করে দমদমে খবর পাঠালেন। দমদম তখন ইংরেজদের সামরিক ঘাঁটি। বাঘের কথা শুনেই “সেখানকার সাহেব লোকেরা আপন চাকর ও অস্ত্রশস্ত্র লইয়া” গৌরীপুর উপস্থিত হল। এবং বাঘটিকে গুলি করে হত্যা করে।

কিন্তু সুন্দরবনের জঙ্গল পেরিয়ে রয়েল বেঙ্গল টাইগার কীভাবে গৌরীপুরে উপস্থিত হল, এই নিয়ে জল্পনা বহুদিনের। সেসময় সাহেবরা জঙ্গল কেটে লোকালয় বানানোর চেষ্টা করছিলেন। তার ফলেই বাসস্থান হারিয়ে বাঘ লোকালয়ে হানা দিয়েছে বলেই সবার ধারণা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Click to Go Up
error: Content is protected !!