ভারতীয় চলচ্চিত্র ও বিনোদন জগতে “তাবাসসুম” কে চেনেন না এরকম ভারতীয় পাওয়া প্রায় অসম্ভব। ১৯৪৪ সালে জন্মগ্রহণ করেই ১৯৪৭ সালে অর্থাৎ মাত্র ৩ বছর বয়সেই বেবি তাবাসসুম নামে অভিনয় জীবন শুরু করেছিলেন। তারপরে ভারতের প্রথম টেলিভিশন টক শো উপস্থাপন করে গোটা ভারতের মন জয় করে নিয়েছিলেন, যার নাম ছিল “ফুল খিঁলে হ্যায় গুলশন গুলশন”। ১৯৭২ সাল থেকে ১৯৯৩ সাল অবধি এই অনুষ্ঠানে এসেছেন বহু বিখ্যাত ব্যাক্তিত্ব। এবং এই অনুষ্ঠান টি ছিল ভারতীয় টেলিভিশন জগতের সব থেকে দীর্ঘায়িত টক শো। টেলিভিশন ছাড়াও তিনি কাজ করেছেন রেডিও ও ওয়েব জগতেও।
ব্রিটিশ ভারতের বম্বে শহরে তাবাসসুম জন্ম গ্রহন করেন। বাবা অযোধ্যা নাথ সচদেব ছিলেন একজন স্বাধীনতা সংগ্রামী, লেখক ও সাংবাদিক। মা আসগরী বেগম। বাবা অযোধ্যানাথ তার মায়ের ধর্মীয় অনুভূতির কথা মাথায় রেখে তার নাম রেখেছিলেন তাবাসসুম অন্যদিকে তার মা আসগরী বেগম তার বাবার ধর্মীয় অনুভূতির কথা ভেবে নাম রাখেন কিরন বালা সচদেব। যদিও তিনি খ্যাত হয়েছিলেন তাবাসসুম নামেই।
তাবাসসুম শিশু অভিনেত্রী হিসেবে নার্গিস (১৯৪৭)-এর পরে মেরা সুহাগ (১৯৪৭), মাঝঁধার (১৯৪৭) এবং বড় বহেন (১৯৪৯)-এ অভিনয়ের মধ্য দিয়ে চলচ্চিত্র জগতে এসেছিলেন। পরে নীতিন বোস দ্বারা পরিচালিত দিদার (১৯৫১)-এ নার্গিসের শৈশব চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন; জনপ্রিয় গান বচপন কে দিন ভুলা না দেনা (যেটি লতা মঙ্গেশকর এবং শমসাদ বেগম গেয়েছিলেন) তাঁর ওপর চিত্রায়ন করা হয়েছিল। এছাড়াও, পরের বছর, তিনি বিজয় ভট্ট দ্বারা পরিচালিত আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ চলচ্চিত্র বৈজু বাওরা (১৯৫২)-তে অভিনয় করেছিলেন, যেখানে তিনি মীনা কুমারীর শৈশব চরিত্রে হাজির হয়েছিলেন। এছাড়াও তিনি জয় মুখার্জি ও আশা পারেখ অভিনীত জনপ্রিয় চলচ্চিত্র ফির ওহি দিল লায়া হুঁ-তে কাজ করেছিলেন। তিনি ‘অজি কিবলা মোহতারমা’ নামক একটি গানে অভিনয় করেছিলেন। বেশ কিছু সময় অভিনয় জগত থেকে দূরে থাকার পরে, তিনি প্রাপ্তবয়স্ক চরিত্রে অভিনয়ের মধ্যে দিয়ে পুনরায় চলচ্চিত্র জগতে প্রবেশ করেছিলেন এবং নিজেকে একজন চরিত্র অভিনেত্রী হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।
ভারতীয় চলচ্চিত্র ও বিনোদন জগতে তিনিই ছিলেন সকলের অবিভাবক ও আদরের। আজ কিছুক্ষন আগে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে শেষ নিস্বাস ত্যাগ করেন তার বাসভবনে।