Home » বাজার থেকে উধাও গুড় বাতাসা , নকুল দানা – ঠাকুর খাবে কি ?

বাজার থেকে উধাও গুড় বাতাসা , নকুল দানা – ঠাকুর খাবে কি ?

গতকাল থেকেই খবরের শিরোনামে বীরভূমের বাহুবলী নেতা অনুব্রত মণ্ডল । বার বার তাঁকে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী দল সিবি আই ডেকে পাঠালেও তিনি প্রতিবারই তার শারীরিক অবনতির কথা বলে ঠিক ওই দিনেই পিজি হাসপাতালের উডবার্ন ওয়ার্ডে গিয়ে ভর্তি হয়ে যান। এটা অনুব্রত বাবু একা নন , রাজ্যের শাসক গোষ্ঠীর অনেক নেতাকেই কেন্দ্রীয় তদন্ত কারী দল ডেকে পাঠালেই সকলেই ওই দিনেই পিজি হাসপাতালের উডবার্ন ওয়ার্ডে গিয়ে ভর্তি হয়ে যান।

এইনিয়ে সামাজিক মাধ্যমে পিজি হাসপাতালের উডবার্ন ওয়ার্ড নিয়ে কম সমালোচনা হয়নি। কিন্তু এবার অন্যরকম হয়েগেল। রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষা মন্ত্রী ও বর্তমান শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় কে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী দল আগে থেকেই নোটিশ দিয়ে জানিয়ে দিয়েছিলেন যে যাইহোক না কেন উডবার্ন ওয়ার্ডে গিয়ে ভর্তি হওয়া যাবে না । এবং এর পরেই ২২ শে জুলাই আচমকা একসাথে হানা দেয় পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বাড়ি এবং ওনার ঘনিস্ট এক বান্ধবী অপরাজিতা মুখোপাধ্যায়ের বাড়িতে । সেখান থেকেই  ”ই ডি” উদ্ধার করে প্রায় ৫০ কোটি নগদ টাকা এবং প্রায় বেশ কিছু কোটি টাকার সোনার অলঙ্কার। এর পর গতকাল অবধি খবরের শিরোনামে ছিলেন ”পার্থ ও অপা” । তাদের গ্রেফতার করার পর থেকে তারা কোন কারাগারে আছেন ? তাদের শরীর কেমন আছেন ? তারা কি খাচ্ছেন ? তারা কবার পাশ ফিরে শুলেন এগুলোই ২৪ ঘণ্টা খবরের শিরোনামে ছিল। শুধু খবরের শিরনামেই নয়, সামাজিক মাধ্যমের প্রায় প্রতিটি প্লাটফর্মে তাদের নিয়ে নানান সমালোচনা।

কিন্তু গতকাল রাত থেকে ”পার্থ আর অপা” র এই টি আর পি কেড়ে নিলেন অনুব্রত মণ্ডল । গতকাল তাঁকে হাজিরা দিতে বলা হয়েছিল সি বি আই দপ্তরে কিন্তু তিনি প্রথমে সজা বাড়ি থেকে বেরিয়ে পিজি হাসপাতালের উডবার্ন ওয়ার্ডে গিয়ে ভর্তি হতে চান আর নিজের বদলে নিজের আইনজীবী কে সি বি আই দপ্তরে পাঠিয়ে দেন শারিরিক অসুস্থতার দোহাই দিয়ে । ওদিকে পিজি হাসপাতালের উডবার্ন ওয়ার্ডে চিকিৎসক রা পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ঘটনা জানার পর আর অনুব্রত কে ভর্তি নেবার সাহস না পেয়ে তাঁকে কিছু পরীক্ষা করে জানিয়ে দেন তার হাসপাতালে ভর্তি হবার কোন কারন নেই । অনুব্রত-র আইনজীবী কে সি বি আই জানিয়ে দেয় অনুব্রত কে দেখা করতেই হবে। অনুব্রত পিজি হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে সি বি আই এর সাথে দেখা না করে সোজা বীরভূমে তার বাড়ি ফিরে যান।  সন্ধ্যায় স্থানীয় বীরভূমের একটি সরকারী হাসপাতালের সুপারের ওপর চাপ দিয়ে একজন চিকিৎসক কে তার বাড়িতে আনিয়ে প্রায় প্রভাব খাটিয়ে ১৪ দিনের বিশ্রাম লিখিয়ে নেন সেই ডাক্তার পরবর্তী কালে সাংবাদিক দের কে জানিয়ে দেন পুরো বিষয়টি এবং শুরু হয় চাপান উতর।

রাত একটায় কলকাতা থেকে সি বি আই বিশাল বাহিনি নিয়ে বীরভূমের দিকে রওনা হয় এবং সকাল ৮টায় অনুব্রত-র বাড়ি ঘিরে ফেলেন । তারপর বেশ কষ্ট করেই অনুব্রত-র বাড়ির ভিতর প্রবেশ করে তাঁকে জেরা করতে শুরু করেন , সুত্রের খবর অনুযায়ী অনুব্রত সি বি আই কে জেরায় সহযোগিতা না করার জন্যই সিবি আই অনুব্রত কে গ্রেফতার করে। তারপর বহু উৎকণ্ঠার পর জানা গেল আসানসোল আদালত অনুব্রত কে ২০শে আগস্ট ২০২২ অবধি  সি বি আই হেপাজতের নির্দেশ দিয়েছেন ।

সকালে গ্রেফতার হবার খবর প্রকাশ হতেই রাজ্যের বিরোধী দল বি জে পির নেতা রা কলকাতা সহ রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় অনুব্রত মণ্ডলের বিখ্যাত উক্তি অনুযায়ী পথচারী দের মধ্যেয় গুড় বাতাসা ও নকুলদানা বিতরণ করতে শুরু করেন। কোথাও কোথাও ঢাক বাজিয়ে তার চরাম চরাম উক্তির বিরোধিতা করেন। ফলত বাজারে দেখা দেয় গুড় বাতাসা ও নকুলদানার অভাব। যা কেউ বেশি কিনতেন না , যার দাম খুবই কম, শুধু মাত্র ঘরে বা দোকানের এক কোনে পড়ে থাকা ঠাকুর কে প্রতহ্য নিবেদন করা হত তা উধাও । এর জন্য দায়ি কে রাজ্য সরকার না কেন্দ্রীয় সরকার ? নাকি এটা অনুব্রত-র যেমন কর্ম তেমন ফল ? এর সাথে সাথে আরও প্রশ্ন উঠে আসে – এর পর কেন্দ্রীয় তদন্তকারি দলের নজরে শাসক গোষ্ঠীর কোন নেতা ? এমনিতেই আদালত শাসক দলের ১৯ জন নেতার এত সম্পত্তির উতপত্তি কি ভাবে সেই তদন্ত করার নির্দেশ দিয়েছেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী দল কে ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Click to Go Up
error: Content is protected !!