Advertise your brand here -Contact 7603043747 (Call & Whatsapp)

শিবপুরের প্রাচীন ও জাগ্রতা মা হাজারহাত কালীর মাহাত্ম ও মন্দিরের ইতিহাস

Table of Contents

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share Our Blog :

Facebook
WhatsApp

হাওড়া শিবপুরের মন্দিরতলায় অবস্থিত ওলাবিবিতলার অতি প্রাচীন মা হাজার হাত কালীর মন্দিরে|এই মায়ের অত্যন্ত জনপ্রিয়তা এ মাহাত্ন ছড়িয়ে পড়েছে আজ হাওড়া সহ গোটা বাংলাই নয়,এমনকি সারা ভারতেও|দক্ষিন ভারতীয় রাও এই মায়ের ভক্ত আজ|সে কিভাবে হেলো,সে কথায় পরে আসৃছি|প্রথমে এই মায়ের মুর্তি প্রকাশ ও শুরুর ইতিহাসটা বলি…
প্রায় দেড় শতাধিক বছরের প্রাচীন এই দেবী ও তার ইতিহাস|এই দেবীর মুর্তি প্রকাশ ঘটেছে মাতৃসাধক তথা তন্ত্রসাধক আশুতোষ মুখেপাধ্যায়ের মাধ্যমে|তিনি ছিলেন উত্তর কোলকাতার চোরবাগান অঞ্চলের বাসিন্দা|চাকুরি করতেন তিনি|কিন্তু মন পড়ে থাকতো মাতৃসাধনায়|মায়ের ধ্যান পুজা জপ নিয়েই মশগুল থাকতেন তিনি|সারা দেশে নানা তীর্থস্থানেও ঘুরে বেড়াতেন|একসময় তাঁর সাধনায় দেবী প্রসন্না হন ও তাঁকে স্বপ্নাদেশে দেখা দেন|সেই স্বপ্নেই দেবী চন্ডী তাঁকে সহস্রভুজা কালীর রুপে দর্শন দেন এ আদেশ দেন,তিনি এই রুপেই প্রকাশিতা হতে চান,সাধকের হাতে এবং পুজা পেতে চান|দেবী নিজের অবস্থানের স্থানটিএ নির্দেশ করে দেন|


দেবীর নির্দেশিত সেই স্থানটি ছিলো আজকের শিবপুর ওলাবিবিতলার সেই স্থান,যেখানে আজ মায়ের মন্দির এ শ্রীবিগ্রহ প্রতিষ্ঠিত|
এই ভাবে স্বপ্নে মায়ের সেই সহস্রভুজা রুপ দর্শন করে অভিভূত হন সাধক|সালটা ছিলো ১৮৭০|দেরি না করেই তিনি শিবপুর ওলাবিবি তলার স্থানীয় হালদার পরিবারের কাছ থেকে ১২৫ টাকা দিয়ে তিন কাঠা জমি কেনেন |কিন্তু দেবীর বিগ্রহ প্রতিষ্ঠী ও মন্দির নির্মানে অসমর্থ ছিলেন তিনি|তবে মায়ের ইচ্ছাতেই সব ঠিক হয়ে গেলো|দেবীর স্বপ্নাদেশের কথা জানতে পেরে,এগিয়ে আসেন স্থানীয় বাসিন্দারা এবং সেই হালদার পরিবার|সকলের অর্থ সাকুল্যে গড়ে উঠলো মায়ের মাটির মন্দির|সেই মন্দিরেই নির্মিত হোলে মায়ের মাটির প্রতিমা|সাধকের স্বপ্নে দেখা দেবীর অবয়ব হুবহু নির্মান করলেন কুমোরটুলির তৎকালীন প্রখ্যাত শিল্পি প্রিয়নাথ পাল মহাশয়|দেবীর দুটি হাত প্রধান এবং বাকি হাতগুলি পিছনের চালিতে এঁকে হাজার হাতের রুপ দেওয়া হয়েছিলো|এই ভাবেই শুরু হয় দেবীর পুজো|প্রতিষ্ঠা হয় বুদ্ধপুর্নিমায়|


যাই হোক, সেই মুর্তি এবং মন্দির বারবার ভগ্ন হয়|সবশেষে ১৯০৫ সালে দেবীর পাকা মুর্তি নির্মানের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়|বিত্তশালী হালদার পরিবার অবং স্থানীয় মানুষের সহযোগীতায় দেবীর পাকা মন্দির নির্মিত হয়|এবং দেবীর মুর্তি সিমন্ট,বালি,চুন,সুরকি,ও আমেরিকান প্লাস্টার সহযোগে নবনির্মিত হয় কুমোরটুলির দক্ষ শিল্পির দ্বারা|প্রকান্ড প্রায় ১২ ফুটেরো বেশী উচ্চতার সেই মুর্তির পিছনের চালীতে সারিবদ্ধভাবে নির্মিত হয় দেবীর হাজারটি হাত|দেবীর দুটি হাত প্রধান ও বাকি ৯৯৮ টি হাত পিছনের চালায় সংলগ্ন|

এই গেলো দেবীর প্রাথমিক ইতিহাস|এবার দেবীর রুপের বর্ননায় আসি|দেবীর এই সহস্রভুজা রুপ আসলে শ্রী শ্রী চন্ডীতে বর্নিত দেবীর সহস্রভুজা রুপরই নামান্তর|শ্রী শ্রী চন্ডীর মধ্যম চরিত্রে দেবীর সহস্রভুজা রুপের উল্লেখ রয়েছে|মহিষাসুর নিধনকালে দেবী আদ্যাশক্তি মহামায়া যে নানান রুপে নিজেকে প্রকাশিতা করছিলেন,তাঁদের মধ্যে এই সহস্রভুজা রপটিই এখান্ পুজিতা হচ্ছেন|দেবী এখানে উজ্জল সবুজাভ নীলবর্না|তিনি ত্রিনয়নী|গোলাকার নয়নগুলি|প্রসান্ত দন্তবিকশিত প্রসন্ন মুখমন্ডল|খানিক শান্ত খানিক ভয়াল দর্শনা|দেবীর মাথায় পঞ্চফুলের মুকুট|দেবীর গলদেশে দুইপাশে রয়েছে নাগহার|তাঁর প্রসারিত বাম হাতে খড়গ এবং ডানহাতে পঞ্চশূল|দেবীর বামপদ স্থাপিত মহাসিংহের উপর এবং ডানপদ মহাপদ্মের উপর|দেবীর সবস্ত্রা|সালংকারা দেবী|বস্ত্র অলংকার এ ফুলের মালায় সজ্জিত করা হয় দেবীকে|হাতে থাকে চাঁদমালা|দেবীর পদতলে শিব নেই,এবং লোলজিহ্বাও নন|তিনি চন্ডী এ কালীকার সংমিশ্রিত রুপে বিরাজমানা|

মায়ের মন্দিরের অভ্যন্তরে দেওয়ালে ব্রহ্মানী,নারায়নী,মাহেশ্বরী,কৌমারী,নারসিংহী,বারাহী আদি দেবী শক্তিগনের এবং মহিৃষাসুরের অঙ্কিত পটচিত্রও রয়েছে|মায়ে

র হাজারটি হাত নাকি সঠিক ভাবে গুনে শেষ করা যায়না,এমনটাই বিশ্বাস|আসলেই যে তিনি বিশ্বমুর্তি,তিনি আদি অন্তহীনা|
এলাকাবাসীদের কাছে মা অত্যন্ত জাগ্রতা|শুধু এই বাংলায় নয়,এৃই মায়ের মাহাত্মকথা ছড়িয়ে পড়েছে আজ দক্ষিন ভারতেও|জনশ্রতি যে,১৯৬০ সাল নাগাদ কৃষ্ণা সুব্রহমন্যম নামে এক তামিল ব্যাক্তি আসেন এখানে মায়ের পুজা দিতে|তিনি ছিলেন দৃষ্টিহীন|মায়ের কাছে চোখের দৃষ্টি ফিরে পাওয়ার জন্য প্রার্থনা জানান|মায়ের কৃপায় একবছরের মধ্যেই নাকি তিনি চোখের দৃষ্টি ফিরে পান|এরপর তিনি নিজ দেশে ফিরে গিয়ে সেখানকার তামিল বাসিন্দাদের কাছে,এই মায়ের মহিমা প্রচার করেন|সেই থেকে তামিল ভক্তরা মায়ের টানে ছুটে আসেন প্রতিবছর শ্রাবন মাসের সময়|শ্রাবন শুক্লপক্ষের শুক্রবার গুলিতে সেই তামিল ভক্তরাই মায়ের পুজার আয়েজন করেন|তাঁরাই তাঁদের মতো দক্ষিন ভারতীয় রিতির ভোগরান্না করে মা কে নিবেদন করেন|মায়ের এ সেই সময় বাঙালি মাছ ভাত ছেড়ে দক্ষিনি পদে ভোগ গ্রহন করেন|সেই সময় দেবীর ভোগে,টক ভাত,ঝাল ভাত,মিষ্টি ভাত,দইবড়া,সাম্বার,উত্তপম আদি দক্ষিন ভারতীর পদে ভোগ নিবেদিত হয়|


এবার আসি,মায়ের নিত্যপুজার কথায়|প্রতিদিন সকাল ৬.৩০ টায় মন্দির খোলে,দুপুর ২ টো পর্যন্ত|এবং সন্ধায় ৫ টা থেকে রাত্রি ৯ টা পর্যন্ত মন্দির খোলা থাকে|দেবীর নিত্যপুজা হয় তন্ত্রমতে|তবে এখানে কোনোকালেই বলিপ্রথার প্রচলন নেই,তাই বলি হয়না|দেবীর নিত্য ভোগে থাকে,ৃভাত,ডাল,তরিতরকারী,ভাজাভুজি,মাছের পদ,পায়েস ও ফল মিষ্টান্নাদি|
মায়ের বাৎসরিক পুজা হয় সাড়ম্বরে বুদ্ধপুর্নিমার দিন,যেদিন মায়ের মুর্তি প্রতিষ্ঠা হয়েছিলো|এবং আরেকটি বিশেষ পুজা হয় দীপান্বিতা অমাবস্যার কালীপুজায়|এই দুটি দিন সাড়ম্বরে হয় মায়ের বিশেষ পুজা|সেই সময়ে অগনিত ভক্ত দর্শনার্থীর ঢল নামে মায়ের মন্দিরে|প্রতিবছর কালীপুজার আগে দেবীমুর্তির অঙ্গরাগ করা হয়|

More Related Articles

Life Style

উত্তর কলকাতার Goodace হসপিটালে স্থাপিত হলো অত্যাধুনিক Zeiss Tivato 700 মাইক্রোস্কোপ

বিশ্বখ্যাত Carl Zeiss সংস্থার তৈরি Tivato 700 হলো এক বিপ্লবী সার্জিক্যাল মাইক্রোস্কোপ, যা নিউরোসার্জারি, স্পাইন সার্জারি এবং জটিল ENT অপারেশনে সার্জনদের কাজকে আরও নির্ভুল ও নিরাপদ করে তোলে। এর উন্নত অপটিক্যাল সিস্টেম, ব্রাইট ইলুমিনেশন, এবং 4K ভিডিও ক্যাপচার সুবিধা চিকিৎসাক্ষেত্রে এক নতুন মান স্থাপন করবে।

Read More »
Raakhee Gulzar's Grand Comeback in Aamar Boss to Be Screened for Rajya Sabha Members on May 3
বিনোদন জগত

Raakhee Gulzar’s Grand Comeback in Aamar Boss to Be Screened for Rajya Sabha Members on May 3

Legendary actress Raakhee Gulzar returns to the big screen after 22 years in Aamar Boss. Directed by Nandita Roy and Shiboprosad Mukherjee, the film will be screened for Rajya Sabha members on May 3, 2025. A heartfelt story about workplace inclusivity for senior citizens, Aamar Boss explores emotional bonds and the urgent need for elderly care in modern workplaces.

Read More »
রাজ‍্য ও রাজনীতি

ব্যারাকপুরে ভৌতিক উপদ্রব। তদন্তে বিখ্যাত প্যারানরমাল রিসার্চর ডাঃ উজ্জ্বল গুপ্ত।

পেশায় চিকিৎসক ডাঃ উজ্জ্বল গুপ্ত কয়েক দশক ধরে এনার্জি বা স্পিরিট নিয়ে রিসার্চ করেচলেছেন। বিজ্ঞান সম্মত উপায়ে ও বিজ্ঞান সম্মত নানাবিধ উপকরণ ও বিভিন্ন উত্তাপ পরিমাপক যন্ত্রাংশ দিয়ে এনার্জি বা স্পিরিট এর উপস্থিতি নির্ধারণ করে থাকেন। ইতিমধ্যেই ডাঃ গুপ্ত কলকাতা পুলিশ, বলিউড ও একাধিক প্যারানরমাল তদন্ত করছেন যা google এ সার্চ করে আপনারা জানতে পরেন।

Read More »
দেশ

কাশ্মীরে ধারাবাহিক সন্ত্রাসবাদের ছায়া: দুই দশকের রক্তাক্ত ইতিহাসের পরেও নিরাপত্তা ব্যবস্থায় রয়ে গেল ফাঁকফোকর ?

ভারতের কাশ্মীর নীতিতে দৃঢ় অবস্থান থাকলেও, প্রশ্ন উঠছে গোয়েন্দা ও মাটির নিরাপত্তার সমন্বয় নিয়ে। প্রতিবারই পরে প্রতিক্রিয়া, আগে প্রতিরোধ নয় – ২০০২ সালে কলকাতার আমেরিকান সেন্টারে যখন হামলা হয়, তখন সেই ঘটনার পর পশ্চিমবঙ্গ সরকার ও কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা সংস্থাগুলি চূড়ান্ত নিরাপত্তা বলয় তৈরি করেছিল। আজও সেই ভবনের সামনে চব্বিশ ঘণ্টা সশস্ত্র পাহারা, সিসিটিভি, ব্যারিকেড, প্রবেশে নিয়মকানুন—সবকিছুই বলছে, সেই ঘটনা থেকে শিক্ষা নেওয়া হয়েছিল। অথচ কাশ্মীরের মতো দীর্ঘকালীন হাই-রিস্ক এলাকায়, যেখানে প্রতি বছরই বড় হামলার ঘটনা ঘটছে, সেখানে পর্যটন কেন্দ্রগুলিতে এই রকম সর্বোচ্চ নিরাপত্তা বলয় তৈরি হয়নি কেন?প্রতি বছরই দেখা যাচ্ছে জঙ্গিরা পাক সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে ঢুকছে। ২০১৬-র পাঠানকোট বা ২০২৩-এর পুঞ্চ হামলা তার উদাহরণ। কিছু হামলায় স্থানীয় বাসিন্দাদের যোগসূত্র সামনে আসছে।

Read More »
error: Content is protected !!