Home » ”একজন” সকল মানুষের মনের সিংহাসনে জায়গা করে নিল কীভাবে ?

”একজন” সকল মানুষের মনের সিংহাসনে জায়গা করে নিল কীভাবে ?

পর্ণা চ্যাটার্জী, কলকাতাঃ বাবা লোকনাথ বাঙালির ঠাকুরের সিংহাসনে বেশ একটা পাকাপাকি জায়গা নিয়েই বিরাজ করছেন। শুধু সিংহাসন কেন মন্দির ও ছড়িয়ে আছে বহু জায়গায়। আমরা প্রত্যহ যেসব দেবতার পুজো করি তাদের সেই অর্থে জন্ম বা মৃত্যু সাল সেভাবে পাওয়া যায় না। ওই সত্যযুগে জন্ম হয়েছিল এই ধরণের কিছু কথা পাওয়া যায়। কিন্তু লোকনাথ বাবা ১৭৩০ সালের ৩১ শে আগস্ট উত্তর ২৪ পরগণা জেলার কচুয়াতে জন্মগ্রহণ করেন। ১৮৯০ সালের ১ লা জুন অর্থাৎ ১২৯৭ বঙ্গাব্দের ১৯ শে জ্যেষ্ঠ দেহত্যাগ করেন। আজ তার তিরোধান দিবস। লোকের বাড়িতে বা মন্দিরে আজ ধুমধাম করে পুজো হচ্ছে।

''একজন'' সকল মানুষের মনের সিংহাসনে জায়গা করে নিল কীভাবে ?

মাত্র ২৫০ বছর আগেও তিনি বেঁচে ছিলেন। মানে দেশে ইংরেজ শাসন রামমোহন রায়ের প্রতিবাদ, বিদ্যাসাগর মহাশয়ের বিধবা বিবাহ প্রচলন, সেই সময়ের একজন মানুষ যে কিনা দেবতা জ্ঞানে পূজিত হচ্ছেন। রাজা রামমোহন রায় বা বিদ্যাসাগর কেও লোকে দেবতাই মানে কিন্তু তারা ঠাকুর ঘরের সিংহাসনে জায়গা পাননি। একজন মানুষ কীভাবে দেবতা হয়ে উঠলেন?

''একজন'' সকল মানুষের মনের সিংহাসনে জায়গা করে নিল কীভাবে ?

কচুয়ায় ব্রাহ্মণ রামনারায়ণ ঘোষালের ঘরে জন্ম হয় লোকনাথ ঘোষালের। আচার্য গাঙ্গুলির শিষ্যত্ব গ্রহণ করে সে ও তার বন্ধু বেনিমাধব চক্রবর্তী সন্ন্যাস গ্রহণের পথে পা বাড়ায়। হিমালয় পাহাড় চূড়ায় দীর্ঘ দিন তপস্যা করে তিনি সিদ্ধিলাভ করেন, তখন তার বয়স ৯০ বছর। বাবা লোকনাথ ছিলেন ত্রিকালদর্শী তিনি নাকি ভূত ভবিষ্যৎ সব বলে দিতে পারতেন। কথিত আছে তিনি অন্যের রোগ নিজের শরীরে নিয়ে নিতে পারতেন। ডেঙ্গু কর্মকার বলে এক ব্যক্তির একটি হেরে যাওয়া আদালতের মামলা তার কৃপায় জিতে গিয়েছিলেন। তারপর তিনি বারুদিতে বাবার জন্য আশ্রম বানিয়ে দিয়েছিলেন।

''একজন'' সকল মানুষের মনের সিংহাসনে জায়গা করে নিল কীভাবে ?

বারুদিতে যখন বাবার নাম ছড়িয়ে পড়ে তখন নাকি তৎকালীন ব্রাহ্মণ সমাজ রেগে গিয়ে তার সিদ্ধিজ্ঞানের পরীক্ষা নিতে চান। তাকে ধূতরা ফুল ও সাপের বিষ খেতে দেওয়া হয়। তিনি স্বেচ্ছায় টা গ্রহণ করেন, এবং তারপরও তিনি সুস্থ ছিলেন। তাহলে তাকে দেবতা বলা হবে সেটাই তো স্বাভাবিক। ১২৯৭ বঙ্গাব্দের আজকের দিনে যেদিন তিনি মারা যান তিনি বেশ অনেক দিন আগে থেকে তার ভক্তদের জানিয়েদিয়েছিলেন যে ওই দিন তিনি দেহ ত্যাগ করবেন। মৃত্যুর দিন আগে থেকে বলে দেওয়া সে বোধহয় সাধারণ মানুষের পক্ষে সম্ভবও নয়। মৃত্যুকালীন সময়ে তার বয়স হয়েছিল ১৬০ বছর। মানুষ এতদিন বাঁচে কি? মনুষ্য মাতৃগর্ভে জন্ম দেওয়া এই মহামানব দেবতা হিসেবে পূজিত হবেন সেটাই তো স্বাভাবিক।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Click to Go Up
error: Content is protected !!