Home » গরমে রক্ষা নেই,আবার লোডশেডিং দোসর !

গরমে রক্ষা নেই,আবার লোডশেডিং দোসর !

স্বর্ণালী পাত্র, কলকাতা: একটা সময় লোডশেডিং ছিল রোজকার ব্যাপার। সন্ধ্যে নামলেই পাড়ায় পাড়ায় নিভে যেতে আলো, বাড়িতে বাড়িতে জ্বলে উঠতো মোমবাতি কিংবা হারিকেন। অনেককাল কলকাতা সহ শহরতলীর বাসিন্দারা এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেয়েছেন। তবে,এই বছর যখন গরমের প্রভাব অন্যান্য বছরের তুলনায় অনেকটাই বেশি, তখন লোডশেডিং হয়েছে দোসর।

গরমে রক্ষা নেই,আবার লোডশেডিং দোসর !


আবহাওয়া দপ্তরের পূর্বাভাস অনুযায়ী কলকাতায় গরমের প্রকোপ থাকবে এখন বেশ কিছুদিন। তাপপ্রবাহের কষ্টও সহ্য করতে হবে। কমবেশি কিছু জায়গায় বৃষ্টিপাত হলেও তা “স্বস্তি” দিতে পারবে না শহর এবং শহরতলীর মানুষদের। এরই মধ্যে লাগাতার বিদ্যুৎ বিভ্রাট। নাজেহাল দশা শহরবাসীর।

গরমে রক্ষা নেই,আবার লোডশেডিং দোসর !

কলকাতা সহ শহরতলীর যেসব এলাকায় csc পরিষেবা রয়েছে যেমন বেলঘড়িয়া থেকে বালিগঞ্জ বহুদলের বাসিন্দা থেকে বস্তিবাসী,সকলেই লোডশেডিং এর দাপটে দুঃসহ অবস্থার অভিযোগ করছেন। এই পরিস্থিতিকে “লোডশেডিং” বলে মানতে নারাজ csc কর্তৃপক্ষ। দাবি সংস্থার কাছে বিদ্যুতের কোন ঘাটতি নেই এবং মানুষের চাহিদা পূরণ করার ক্ষমতাও রয়েছে। তবে কিছু “নিয়ম না মানা” গ্রাহকদের জন্য সকল মানুষকে এই পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হচ্ছে। সিএসসি কর্তারা বলেছেন, দিন দিন বাতানুকুল যন্ত্রের (AC)ব্যবহার বাড়ছে। কিন্তু অনেকেই বাড়িতে এসি নিলেও তার নিয়ম মেনে জানাচ্ছেন না CESC-কে।

গরমে রক্ষা নেই,আবার লোডশেডিং দোসর !

ফলে কোন এলাকায় বিদ্যুতের যে পরিমাণ “লোড” ঠিক করা হয়েছে তার চেয়ে বেশি ব্যবহার হচ্ছে আর তাতেই এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাচ্ছে। Csc এর বক্তব্য, এই লোডশেডিং বলা চলে না এটি হল “ফিউজিং”। সিএসসির এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর অভিজিৎ ঘোষ বলেন,”বিদ্যুতের কোন ঘাটতি নেই। কিন্তু এত মানুষ আমাদের না জানিয়ে এসি লাগাচ্ছেন যে, সিএসসির কাছে অনেক এলাকার লোক সম্পর্কে আগাম ধারনা নেই। সেই কারণে সমস্যা হচ্ছে। আমরা সকলের কাছে আবেদন করছি, নিয়ম মেনে আমাদের জানিয়ে এসি লাগান ও ব্যবহার করুন।” তিনি এও বলেন মার্চ,এপ্রিল,মে মাসে ৪৫ হাজারের মতো এসি লাগানোর আবেদন জমা করলেও ওই সময় এসি বিক্রি হয়েছে দেড় লক্ষ্যের উপরে।

গরমে রক্ষা নেই,আবার লোডশেডিং দোসর !

শুধু কলকাতা নয়, হাওড়া হুগলী উত্তর ২৪ পরগনা জেলার অনেক এলাকাতে সিএসসি পরিষেবা রয়েছে। সেখানেও নিত্যদিন লোডশেডিং এ নাজেহাল অবস্থা বাসিন্দাদের। তাদের অভিযোগ,”গরম যেভাবে বাড়ছে তাতে এসি তো চালাতেই হবে। আর পয়সা যখন নিচ্ছে তখন পরিষেবা দিতে হবে। আমাদের দিকে আঙুল তুললেই তো আর হবে না।” অনেকেই প্রশ্ন করছেন,বিদ্যুতের চাহিদা দিন দিন বাড়তেই থাকবে। আরো বেশি মানুষ এসি ব্যবহার করবেন। তবে কি এর কোন সমাধান নেই?csc কি বেশি লোড নেওয়ার ব্যবস্থা করতে পারে না? সিএসসি কর্তা নিজে মুখে শিকার না করলেও আসলে বিষয়টা এমনই দাঁড়াচ্ছে যে এর সত্যিই কোন সমাধান নেই। প্রযুক্তিগত ভাবেই গরমে বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন হতে থাকবে কলকাতা ও শহরতলী।

গরমে রক্ষা নেই,আবার লোডশেডিং দোসর !

না জানিয়ে এসি লাগানোর ফলে প্রায় সকলেই শিকার হচ্ছেন “ফিউজিং”-এর। এমন অবস্থায় প্রশ্ন উঠছে সিওসি কর্তৃপক্ষ যারা না জানিয়ে এসি লাগাচ্ছেন তাদের বিরুদ্ধে কেন ব্যবস্থা নিচ্ছে না? এই প্রশ্নের উত্তরে অভিজিৎ বলেন,”আমরা গ্রাহকদের বিনম্রভাবে বলি যে আমাদের জানান। কিন্তু অনেকেই তা শোনেন না। এক্ষেত্রে আইনের ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ থাকলেও সেটা সাধারণত করা হয় না। কেউ কেউ আবার একটি এসির অনুমতি নিয়ে একাধিক এসি লাগাচ্ছে।” চলতি বছরে বিদ্যুৎ সরবরাহ বেড়েছে বলেও জানিয়েছে সিএসসি। ২০২২ সালে ২৪ ঘন্টায় যেখানে সর্বোচ্চ সরবরাহ ছিল মে মাসের একটি দিনে ২৩৯৩ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ, সেখানে চলতি বছরে এপ্রিলের ১৮ তারিখ ২৫০৩ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়েছে।

গরমে রক্ষা নেই,আবার লোডশেডিং দোসর !
চাহিদা অনুযায়ী সরবরাহ বৃদ্ধি পেলেও সংস্থার বিরুদ্ধে খুব বেড়েছে মানুষের। দেখেই মনে করছেন সিএসসির একচেটিয়া ব্যবসা হওয়াতেই সব সমস্যা। তবে csc কর্তৃপক্ষ জানায়, "শুধু আমরাই নয় সব ক্ষেত্রেই একই নিয়ম। অন্য রাজ্য তো বটেই বাংলাতে ও রাজ্য বিদ্যুৎ পর্ষদের ক্ষেত্রেও এসি নেওয়ার জন্য একই নিয়ম।"তাই শুধু সিএসই এলাকাতেই নয় গোটা রাজ্যে বিদ্যুৎ বিভ্রাট সমস্যায় ভুগছে মানুষ। তবে, উপভোক্তারা নির্দিষ্ট পরিমাণের থেকে বেশি বিদ্যুৎ ব্যবহার না কমালে, এই সমস্যার কোন সুরাহা হবে না বলেই জানিয়েছেন বিদ্যুৎ মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Click to Go Up
error: Content is protected !!