কলকাতাঃ মাঝরাতেও চলত তারস্বরে গান বাজিয়ে নাচ-গান। আচমকা-আচমকাই ফাটত বাজি। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের মেন হস্টেলের (Jadavpur University Main Hostel) আবাসিকদের এহেন ‘অত্যাচারে’ অতিস্ট পোদ্দারনগরের বাসিন্দারা। তাঁদের অভিযোগ দিনের পর দিন হস্টেলের আবাসিকদের ‘তাণ্ডবে’ রাতের ঘুম উড়েছিল তাঁদের। চিৎকার-চেঁচামেচি, নাচ-গান, বাজি ফাটানোতো আছেই, সেই সঙ্গে আশপাশের মেয়েদের লক্ষ্য করে অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি, মদ খেয়ে বোতল ছোড়ার অভিযোগও উঠছে আবাসিকদের বিরুদ্ধে।
৯ অগস্ট রাতে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের মেন হস্টেলের বারান্দা থেকে পড়ে মৃত্যু হয় প্রথমবর্ষের এক পড়ুয়ার (Jadavpur University Student Death)। সেই ঘটনাকে ঘিরেই উত্তাল গোটা রাজ্য-রাজনীতি। তারমধ্যেই ছাত্রদের বিরুদ্ধে মধ্যরাত পর্যন্ত তান্ডবের অভিযোগ পোদ্দারনগরের বাসিন্দাদের। তাঁদের দাবি, ছাত্র-মৃত্যুর পরে তুলনামুলক ভাবে ‘শান্ত’ হস্টেলের পরিবেশ।
তবে অভিযোগ উড়িয়ে এক হস্টেল আবাসিকের পাল্টা প্রশ্ন, ‘‘এই অভিযোগ সত্যি হলে ওঁরা আগে জানাননি কেন? এখন একটা ঘটনা ঘটেছে, তার পরে যত দোষ সব আমাদের! বিষয়টা এমন যে, লোহা গরম আছে, তাই তাকে পিটিয়ে দাও।’’
হস্টেল সংলগ্ন একটি ফ্ল্যাটের বাসিন্দা আবার অভিযোগ করছেন,‘‘ফ্ল্যাটের ছাদ থেকে হস্টেলে র্যাগিং হতেও দেখেছি। রাতে ছাত্রাবাসের তেতলার বারান্দায় অন্তর্বাস পরে ছাত্রকে এক পায়ে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখেছি। এক হাতে কান ধরে, অন্য হাতে জানলার গ্রিল ধরে তিনি দাঁড়িয়ে ছিলেন।’’ হস্টেল সংলগ্ন আরেকটি ফ্ল্যাটের বাসিন্দা এক মহিলা জানাচ্ছেন,‘‘ওঁদের অসভ্যতার কারণে মেয়েরা ছাদে উঠতে পারেন না। জানলা বন্ধ রাখতে হয়।’’
পুলিশ সুত্রে খবর, মাঝেমধ্যেই হস্টেল নিয়ে একাধিক অভিযোগ উঠেছে। কিন্তু হস্টেলে প্রবেশ নিষিদ্ধ থাকায় পুলিশ আধিকারিকেরা অভিযোগ খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য তা হস্টেল সুপার বা রেজিস্ট্রারের কাছে পাঠাত। তার পরে কী ব্যবস্থা নেওয়া হল, তা নিয়ে পুলিশকে কোনও আপডেটই দিতেন না রেজিস্ট্রার। তবে ছাত্রমৃত্যুর তদন্তে নেমে পুলিশ জেনেছে, হস্টেলের নির্দিষ্ট নিয়মকানুন আছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ও ডিন পুলিশকে জানিয়েছেন, হস্টেলে আইনের শাসন নেই।