পর্ণা চ্যাটার্জী, কলকাতাঃ পৃথিবীতে বহু রকম শিল্পকলার নিদর্শন দেখা যায়। যত দিন এগোচ্ছে তত নতুন নতুন রকমের শিল্পকলাও তৈরি হচ্ছে। তেমনই এক নতুন ধরণের শিল্প কলা তৈরি হয়েছে মানুষের ত্বকের ওপরে। ত্বকের ওপরে ফুটে উঠছে নানা রকম নকশা বা অক্ষর, কখনও বা ডুডল চিত্র। তবে আশ্চর্যের বিষয় এই নকশা তৈরি করতে কোনও রকম কালি ব্যবহৃত হয়নি। এক ঝলকে মনে হবে ত্বকের ভিতর তৈরি হয়ে ওপরের দিকে উঠে আছে এই ত্রিমাত্রিক চিত্রগুলি।
দেখতে ভালো লাগলেও এই চিত্রকলার পিছনে রয়েছে ‘ডার্মাটোগ্রাফিয়া’ নামক এক ত্বকের অসুখ। সকলেরই ত্বকের ওপর কোনও ধারালো কিছু দিয়ে আঁচড় কাটলে অনেক সময় কেটে না গেলেও ত্বকের সেই আঁচড় বরাবর স্থান ফুলে যায়। সেই ফুলে যাওয়া স্থান আবার খুব তাড়াতাড়ি মিলিয়েও যায়। কিন্তু এই ‘ডার্মাটোগ্রাফিয়া’ আক্রান্ত রোগীদের সেই আঁচড় বরাবর ফুলে যাওয়া অংশ সহজে মিলিয়ে যায় না। তাদের ত্বক খুব সংবেদনশীল হয়, তাই সেই দাগ থেকে যায় বেশ কয়েকদিন পর্যন্ত। এই রোগকে অনেকে ‘স্কিন রাইটিং’ নামেও অভিহিত করে থাকেন। এই রোগ একে বারেই ছোঁয়াচে বা ভয়ঙ্কর কোনও অসুখ নয়। তেমন কোনও ক্ষতিকর প্রভাবও নেই এই রোগের।
পরিসংখ্যান বলছে পৃথিবীর জনসংখ্যার ৫% শতাংশ মানুষ এই রোগে আক্রান্ত। এই রোগকে কাজে লাগিয়েই তৈরি হয়েছে এক ধরণের শিল্পকলা। প্রায় ৯ বছর আগে ব্রুকলিনের এক শিল্পী আরিয়ানা পেজ রাসেল এই শিল্পকলার জনক। ডার্মাটোগ্রাফিয়া আক্রান্ত মানুষের ত্বকের ওপর তিনি বিভিন্ন রকম ছবি আঁকতেন। রোগের কারণে সেই জায়গা ফুলে উঠে সেই ছবি স্থায়ী হত বেশ কিছুদিন। শিল্পের মাধ্যম হিসেবে একটি রোগকে বেছে নেওয়া এ ঘটনা পৃথিবীর ইতিহাসে বিরল। ‘ডার্মাটোগ্রাফিয়া’ রোগকে কাজে লাগিয়ে এই শিল্প তৈরি হয় বলে এই শিল্পকলাকে ‘ডার্মাটোগ্রাফি’ বলে অভিহিত করা হয়।