বাটা হলো একটি বহুজাতিক জুতো প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান। এর প্রধান কার্যালয় অবস্থিত সুইজারল্যান্ডের লুসানে । ২৬টি দেশে বাটার জুতা তৈরির কারখানা রয়েছে। ৫০টিরও অধিক দেশে বাটা কোম্পানির শাখা রয়েছে। প্রতিষ্ঠা হওয়ার পর থেকে বাটা কোম্পানি ১৪ বিলিয়নেরও অধিক জুতা বিক্রি করেছে।
![](https://i0.wp.com/theindianchronicles.com/wp-content/uploads/2022/12/Tomas_Bata-224x300.jpg?resize=299%2C400&ssl=1)
বাটা কোম্পানি প্রতিষ্ঠিত হয় ১৮৯৪ সালে, তখনকার অস্ট্রো-হাঙ্গেরীয় সাম্রাজ্যের য্লিন শহরে (বর্তমানে এটি চেক প্রজাতন্ত্রের অন্তর্গত)। বাটার প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন টোমাস বাটা, চেক ভাষায় উচ্চারণ: [ˈtomaːʃ ˈbata])। টোমাস বাটার পরিবার সুদূর অতীত হতে মুচির পেশায় নিয়োজিত ছিলো। ১ম বিশ্বযুদ্ধের সময়ে সেনাবাহিনীর জন্য জুতা তৈরি করে বাটা কোম্পানির ব্যবসার প্রসার ঘটে। পাইকারি হারে জুতা নির্মাণের ক্ষেত্রে বড় শিল্প প্রতিষ্ঠান হিসাবে বাটা ছিল অগ্রদূত।
টোমাস বাটা তার সমাজ সচেতনতার জন্য প্রসিদ্ধ ছিলেন। তিনি তার কর্মীদের জন্য বাসস্থান, সিনেমাহল, এবং অন্যান্য সেবার ব্যবস্থা করেন। টোমাস বাটাকে এই কারণে অনেক সময় “পূর্ব ইউরোপের হেনরি ফোর্ড” বলে অভিহিত করা হয়ে থাকে।
১৯৩২ সালে দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে এক বিমান দুর্ঘটনায় টোমাস বাটা য্লিন বিমানবন্দরে মারা যান। তার সৎভাই জ্যান আন্টোনিন বাটা এই কোম্পানির দায়িত্ব নেন। সেসময় বাটা কোম্পানিতে নিযুক্ত ছিলো ১৬,৫৬০ জন কর্মী আর ২৭টি কারখানা। এর প্রায় সবটাই অবস্থিত ছিলো বোহেমিয়া-মোরাভিয়া এলাকায় (১৫,৭৭০ জন কর্মী, ১৫০০ দোকান, ২৫টি কারখানা) এবং স্লোভাকিয়ায় (২৫০ জন কর্মী ও ২টি কারখানা)। এর বাইরে সারা বিশ্ব জুড়ে বাটার ২০টি কারখানা, ১৩২টি দোকান এবং ৭৯০ জন কর্মী ছিল।
জ্যান আন্টোনিন বাটার অধীনে বাটা কোম্পানির দ্রুত প্রসার ঘটে। ইউরোপ, উত্তর আমেরিকা, এশিয়া, এবং উত্তর আফ্রিকা মহাদেশ জুড়ে বাটার জুতা জনপ্রিয় হয়ে উঠে। এসময় বাটা কোম্পানির সদরদপ্তর ও সর্ববৃহৎ স্থাপনা ছিলো য্লিন শহরেই। এখানে জুতো উৎপাদন ছাড়াও বাটা টায়ার, খেলনা, ও প্লাস্টিকের তন্তুও উৎপাদন শুরু করে।
১৯৩০ এর দশকে জ্যান বাটা বোহেমিয়া ও মোরাভিয়া এলাকার কারখানা ও দোকানপাটের সংখ্যা বৃদ্ধি করেন। আগের চাইতে দ্বিগুণ হয়ে কর্মীর সংখ্যা দাঁড়ায় ৩৮ হাজারে, আর ২২০০টি দোকান ও ৭০টি কারখানা এই এলাকায় চালু হয়। স্লোভাকিয়াতে ২৫০ জন কর্মী থেকে বেড়ে মোট কর্মীর সংখ্যা হয় ১২,৩৪০ আর কারখানার সংখ্যা হয় ৮টি।
৩০ এর দশকে বিশ্বজুড়ে মন্দা দেখা দেয়। তা সত্ত্বেও জ্যান বাটা চেকোস্লোভাকিয়া ও বিশ্বজুড়ে তার ব্যবসার আকার প্রায় ৬ গুণ বাড়ান। ১৯৩২ থেকে ১৯৪২ এর মধ্যে বাটা কোম্পানির মোট কর্মীর সংখ্যা বেড়ে হয় ১০৫,৭৭০ জন। ১৯৩০ এর দশকে ইউরোপের অর্থনৈতিক মন্দার কারণে চেকোস্লোভাকিয়াতে উৎপাদিত জুতো বিদেশে রপ্তানি করা ব্যয়বহুল হয়ে পড়ায় ব্রাজিল, ব্রিটেন, ও কানাডাতে বাটার কারখানা ও শাখা চালু করা হয়।