Home » মাকালীর আসনে পূজিতা পরিবারের বড় বৌমা।

মাকালীর আসনে পূজিতা পরিবারের বড় বৌমা।

১৯৬০ এর দশকে বিশ্ব বরেন‍্য চিত্র পরিচালক সত‍্যজিৎ রায়ের পরিচালনায় একটি ছবি আসে যা ভীষন রকমের জনপ্রিয় হয়েছিল। “দেবী”। অভিনয়ে ছিলেন ছবি বিশ্বাস, সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়, শর্মিলা ঠাকুর, অনিল চট্টোপাধ্যায় ও করনা বন্দোপাধ‍্যায়। ছবিটির মূল বিষয়বস্ত ছিল – দয়াময়ী ও তার স্বামী তার বড় ভাইয়ের (কালীকিঙ্কর রায়)সাথে থাকে। এলাকার ভেতর তিনি একজন নামকরা মানুষ । যখন দয়াময়ীর স্বামী কলিকাতায় চলে যায় পড়া লেখা করার জন্য, তখন দয়াময়ী তার বুড়ো শশুরকে দেখা-শুনা করতে শুরু করে। তার এক পাশে খোকা থাকে যার সাথে তার বড় একটি বন্ধুত্ব শুরু হয়।পরে তিনি একটি স্বপ্ন দেখে যেখানে দয়াময়ীকে তিনি মা কালীর রূপে দেখেন। তিনি বলেন যে সে পূজার করার যোগ্য। এবার ঠিক এই “দেবী” চলচ্চিত্রের বাস্তব ঘটনা খুঁজে পাওয়া গেল বাকুঁড়ায়।

বিগত প্রায় ১২৫ বছর ধরে এক অন্যরকমের কালী পূজার সাক্ষী বাঁকুড়ার মীর্জাপুর গ্রাম। বাঁকুড়া । এখানকার সাঁতরা পরিবারের পূজোতে কোন মৃন্ময়ী মূর্তি নয়, মাকালীর আসনে পূজিতা ঐ পরিবারের বড় বৌমা। গলায় রক্ত জবার মালা, কপালে রক্ত চন্দনের তিলক। দেবীর সাজে সজ্জিতা ঐ মহিলাকেই এখানে কালী পূজার দিন নিষ্ঠা ভরে পূজা করা হয়।

ওই পরিবারের সদস্য মহাদেব সাঁতরা এই পূজো প্রসঙ্গে বলেন, ঠিক কি কারণে এই পূজোর নিয়ম জানা নেই, এটুকুই শুনে আসছি আমাদের বাড়ির পূজোতে প্রতিমা তৈরী করা চলেনা, পরিবারের বড় বৌকেই মা কালী হিসেবে পূজা করা হয়। বিগত সাত পুরুষ ধরে সেই প্রথা আজও অব্যাহত আছে বলে তিনি জানান।

৩৮ বছর থেকেই মা কালী হিসেবে পূজিতা হয়ে আসছেন হীরালালা সাঁতরা। তিনি বলেন, মাটির প্রতিমা তৈরীতে নিষেধ আছে, হয় সোনা কিম্বা অষ্ট ধাতুর প্রতিমা তৈরী করতে পারলেই প্রতিমা পূজা সম্ভব, তার আগে নয়। তবে পূজোর সময় তাঁর বাহ্যজ্ঞান থাকেনা, ফলে সেই মুহুর্তের অনুভূতি বলা সম্ভব নয় বলে তিনি জানান।

বাঁকুড়া থেকে দেবজিৎ দত্ত

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Click to Go Up
error: Content is protected !!