বাঙালির বারো মাসের তেরো পার্বণের অন্যতম পার্বণ হল এই “হাতেখড়ি”। সাধারণত পরিবারের কর্তা, পরিবারের সর্ব কনিষ্ঠ সদস্যকে তার পাঠ্য পুস্তক বিদ্যা শুরু করার আগে সরস্বতী পুজোর দিন, সরস্বতী প্রতিমার সামনে, প্রতিমার পুজোয় দেওয়া মাটির দোয়াতে আলপোনা দেবার খড়িমাটির কালি দিয়ে বা স্লেট এ খড়ি দিয়ে হাত ধরিয়ে অ আ ই ঈ বা সরস্বতী লিখে আনুষ্ঠানিক সুচনা করাতেন। আজকের দিনে এই প্রথা প্রায় বিলুপ্ত বলেই মনে করা হয়। বর্তমানে স্লেট ও খড়ি বা চকও বিলুপ্ত। যাই হোক, বর্তমানে খবরে প্রকাশ আগামী ২৬ শে জানুয়ারি ২০২৩ তারিখে, সরস্বতী পুজো ও প্রজাতন্ত্র দিবসের দিন, বিকাল ৫টায়, রাজ ভবনের ইস্ট লনে রাজ্যের বর্তমান রাজ্যপাল ড. সিভি আনন্দ বোসের “হাতেখড়ি” অনুষ্ঠিত হবে।
গতকাল এইখবর প্রকাশের সাথে সাথেই শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা সাথে তিক্ত কটাক্ষের বন্যা। সামাজিক মাধ্যমে বিরোধী দলের নেতা ও সমর্থকদের সেই কটাক্ষে উঠে এসেছে মাননীয়া মূখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের সাথে রাজ্যপালের আঁতাতের কথা।
রাজ্যর সাংবিধানিক ক্ষেত্রে রাজ্যপালের ভূমিকা সর্বাগ্রে। রাজ্যপাল হিসাবে দায়িত্ব নেবার প্রথম দিন থেকেই তিনি “বাংলা ও বাংলা ভাষা”র প্রতি আবেগ জানিয়েছিলেন। রাজ্যের সাংবিধানিক ব্যাবস্থা সঠিক পরিচালনার ক্ষেত্রেও তার বাংলা ভাষা বলা ও লেখা জানা টা আব্যশিক বলেই তিনি মনে করেন। তাই তিনি বাংলা ভাষা শেখার দিনটিকে বাংলার প্রাচিনতম রীতি অনুযায়ী সরস্বতী পুজোর দিনটিকে ঠিক করে বাংলা তথা রাজ্যের ভাবাবেগ কে সম্মান জানিয়েছেন কিন্তু বিরোধী দলের অন্তরায় এলো তখন, যখন আমন্ত্রণ পত্রে দেখা গেল মাননীয়ার নাম।
শুরু হল সামাজিক মাধ্যমে কটাক্ষের বন্যা। যেখানে ইশারা করা হচ্ছে রাজ্যপাল কে হাতেখড়ি দেবেন মমতা বন্দোপাধ্যায় এবং পরবর্তীকালে তিনিই রাজ্যপাল কে কথা বলাও শেখাবেন।
এই রধনের কটাক্ষ, বাংলা তথা পশ্চিমবঙ্গের ভাবাবেগ কে আঘাত করে তা নিয়ে ভাবতে অনেকেই ভুলেছেন। রাজনৈতিক দিক থেকে রাজ্যপাল ড. সিভি আনন্দ বোস যদি মাননীয়া কে সমর্থন করতেই চান তাহলে হাতেখড়ির আনুষ্ঠানিক ঘোষনা তিনি নিশ্চিতরূপে করতে দিতেন না। একজন অবাঙালী রাজ্যপাল তিনি বাংলা শিখতে আগ্রহী তাতে আমাদের সকলের গর্বিত হওয়া উচিত, যেখানে আমরা নিজেরাই ক্রমশ বাংলা ভাষা আর বাঙালি জাতি কে নিয়ে সংরক্ষণের কথা আলোচনা করি।