Home » VLOGGING আর রিলস্ এর নামে সামাজিক মাধ্যমে বেড়েই চলেছে অশ্লীলতা। দায় কার?

VLOGGING আর রিলস্ এর নামে সামাজিক মাধ্যমে বেড়েই চলেছে অশ্লীলতা। দায় কার?

শিক্ষা ও সংস্কৃতিতে একদা ভারতবর্ষ ছিল গোটা পৃথিবীর কাছে একটি দৃষ্টান্ত। ভারতীয় মহিলাদের ঐতিহ্যবাহী পোষাক ও রীতি রেওয়াজ ছিল ভারতের অহংকার। কিন্তু আজ এসব অতীত। ক্রমশ এই অহংকার, এই গর্ব মাটিতে মিশতে চলেছে স্মার্ট ফোন আর সস্তার ইন্টারনেটের দৌলতে। এমনকি এই বাংলাতেও ঘরে ঘরে ছড়িয়ে পড়েছে ভ্লগিং ও রিলস্ বানিয়ে মোটা টাকা উপার্জনের লোভ আর তার সাথেই বাড়ছে অশ্লীলতা। বাংলার গৌরবময় ইতিহাসের কথা নতুন করে আলোচনা করার কিছু নেই। বিগত দশক ধরে দূর্গা পুজোর খ‍্যাতি এনে দিয়েছে বিশ্বমানের ঐতিহ্যের  সম্মান। বাংলার উৎসব সার্বজনীন থেকে হয়েছে বিশ্বজনীন। এছাড়াও সাহিত্য অর্থনীতি নৃত‍্য সঙ্গীত নাটক চলচ্চিত্র ইত্যাদি প্রায় সব কিছুতেই বাঙালি আজ বিশ্বজয়ী। কিন্তু আজ সকলের অলক্ষে এই গৌরব এই অহংকার মাটিতে মিশতে চলেছে।

ছবি সৌজন্যে – গুগল।

করোনা কালের পর থেকেই মানুষ হয়ে পড়েছে আত্মকেন্দ্রিক। নতুন করে বাঁচার তাগিদে এই বাংলাতও বহু মানুষ কর্মহীন হয়েছেন। অনেকেই পেশা পরিবর্তন করেছেন। অকল্পনীয় করোনা কালের দুশ্চিন্তা মানুষ কে করে তুলেছে আরো অর্থ পিপাসু আর তার সাথে শর্টকাটে অর্থ উপার্জনের লোভ। চাই শুধু একটা ভালো স্মার্ট ফোন আর ইন্টারনেট।

ছবি সৌজন্যে – গুগল।

চিনের টিকটক নামের একটি অ‍্যাপ কে কেন্দ্রীয় সরকার ভারতে নিষিদ্ধ করার পরেই টিকটকের বাজার দখলে নামে ইউটিউব ফেসবুক সহ আরো অন‍ান‍্য বেশকিছু অ‍্যাপ। যেখানে শর্ট রিলস্ ভিডিও বা ভ্লগিং ভিডিও করে আপলোড করতে হবে আর তা যদি লক্ষ‍্য লক্ষ‍্য মানুষ চালিয়ে দেখে তাহলেই কেল্লাফতে। আপনার রোজগার হবে মোটা টাকার। যার সংখ‍্যাটা লক্ষ‍্যাধিক বললেও কম বলাহবে। বহু মানুষ এই শর্ট রিলস বা ইউটিউব ভ্লগিং করে বাড়ী গাড়ী করেছেন।

ছবি সৌজন্যে – গুগল।

এখন এই ভাবে অর্থ রোজগারের প্রতিযোগিতায় নেমেছে আবাল বৃদ্ধ বনিতা। তবে দর্শকের আকর্ষণ কাড়ার প্রতিযোগিতায় নারীর সংখ্যা টা ক্রমশ বাড়ছে। যেখানে আগে ইউটিউবে নানা রকম টেকনোলজির উন্নয়ন বিষয়ক, যেকোন শিক্ষামুলক ভিডিও, চলচ্চিত্রের সমালোচকদের ভিডিও বা নিত‍্য নতুন জিনিসের ভালোমন্দের ভিডিও আপলোড হত সেখানে আজ একাধিক বাঙালি নারী ভ্লগিং এর নামে সুক্ষ পোষাকে শরীর প্রদর্শন করে অর্থ উপার্জনের রাস্তা খুঁজে পেয়েছেন। রেখেছেন সদস‍্য হবার চাঁদাও যা শুরু হয় ৫০০ টাকা থেকে। সেই চাঁদা দিলে আপনি পাবেন কিছু বিশেষ সুবিধা। আশাকরি কি সেই সুবিধা তা এখানে আরো খুলে না বলাই ভালো। এমনকি বিবাহিত নারীরাও সারাদিন ভ্লগিং করছেন। সেই সব ভিডিও তে অচেনা পুরুষরা নানান রকমের দাবী রাখছেন। তাদের আবদার ও ইচ্ছা অনুযায়ী পোষাক পরে মনোরঞ্জন করছেন সেই সব নারীরা। অবাক করা বিষয় হলো সেই সময় মোবাইল ক‍্যামেরাটি পরিচালনা করেন স্বয়ং স্বামী নিজেই। এদের সন্তানরা এসব দেখছে। কি শিখছে তারা। সামাজিকতা আজ কোথায় পৌঁছে গিয়েছে সেটা এবার ভাবার সময় হয়েছে। অর্থ উপার্জন আজকের দিনে ভীষন প্রয়োজন কিন্তু এই ভাবে উপার্জন কি সমাজের ক্ষতি করছে না?

ছবি সৌজন্যে – গুগল।

রইলো পড়ে প্রশাষনের কথা, কারোর তো এই নিয়ে কোন মাথা ব‍্যাথা নেই। তাই কোন অভিযোগ করারও কেউ নেই। এই গোটা পৃথিবীতে সবথেকে বেশী টাকার ব‍্যাবসা হয় দেহ ব‍্যাবসা আর পর্ন ফিল্মের। সুযোগ পেলে দেহ ব‍্যাবসার খদ্দের নারী পুরুষ সবাই হয় আবার পর্ন ফিল্ম ও নারী পুরুষ নির্বিশেষে সকলেই উপভোগ করেন কিন্তু প্রকাশ‍্যে সকলেই অস্বীকার করেন। তখন সবাই সাধু বা সাধ্বী হয়ে যান। ঠিক সেই ভাবেই এই অশ্লীল রিলস্ ও অশ্লীল ইউটিউবে ভ্লগিং লাখ লাখ মানুষ নিরিবিলিতে বা একান্ত সময়ে উপভোগ করেন। এই অশ্লীল ডিজিটাল ক্রিয়েটরদের  আয় হয় নিশ্চয়ই তবে অজান্তেই অন্ধকারে  তলিয়ে যাচ্ছেন নিজেরাও সাথে সাথে ক্ষতিগ্রস্ত করছেন সমগ্র সমাজের। এখান থেকেই আগামী দিনে ঘটবে নারকীয় অপরাধিক ঘটনা।

এর দায় কে নেবে?
সরকার? প্রশাষন? নাকি সামাজিক মাধ‍্যম গুলি?
ভাবার সময় এসেছে। ভাবুন। যদি কিছু আমাদের জানাতে চান, তাহলে কমেন্ট করে লিখে জানাতে পারেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Click to Go Up
error: Content is protected !!